” মহাসম্মানিত উম্মিয়া ত্বরিকা ”
যে ইলমের দ্বারা যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নৈকট্য এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নৈকট্য অর্জিত হয়ে থাকেন। যে ইলমের দ্বারা বান্দা তায়াল্লুক মায়াল্লাহ তায়াল্লুক মাআর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাছিল করে থাকে, সেটা হচ্ছে ইলমুত তাছাওউফ।
বাংলাদেশে এক সময় অনেক ”ত্বরীকার” প্রচলন ছিলো। যেমন হুসাইনিয়া, রুহানিয়া, মাদারিয়া, শাফফারিয়া ও আহমদিয়া ইত্যাদি।
আর ইলমে তাছাওউফ হাসিল করার পদ্ধতিই হলো ”ত্বরীকা”।
হযরত শরফুদ্দিন বু-আলী কালান্দার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কতৃক কালান্দারিয়া ”ত্বরীকা”।
হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আওলাদ হযরত আওয়াল হক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খালিদিয়া ”ত্বরীকা” এবং উনার আওলাদ শায়েখ নূরে কুতুবে আলম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নূরী ”ত্বরীকার”ও প্রচলন ছিলো।
এছাড়া সুহরাওয়ার্দিয়া ”ত্বরীকার” ব্যাপক প্রচলন ছিলো। আফ্রিকাতে শাজেলিয়া ”ত্বরীকার” প্রচলন এখনো রয়েছে।
নতুন নতুন ”ত্বরিকা” সৃষ্টির দুইটি কারন লক্ষ করা যায়;-
১. ইলমে তাসাউফ তথা মা’রেফত-মুহব্বত হাসিলের বিষয়কে সহজ করা।
২. মানুষ যাতে অধিক মা’রিফত-মুহব্বত হাসিল করতে পারে।
হযরত বাহউদ্দিন নকশবন্দি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ইলমে তাসাউফ চর্চাকে অনেক সহজ পদ্ধতি বর্ণনা করেন। উনার ”ত্বরিকা” কে নকশবন্দিয়া ”ত্বরীকা” বলা হয়।
পরবর্তিতে হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এই ”ত্বরিকা” কে আরো অনেক সংস্কার করেন। তিনি মা’রিফত মুহব্বত উনার বিষয়টিকে আরো প্রসারিত করেন। পূর্ববর্তি সকল ”ত্বরিকার” মাধ্যমে বেলায়েতে ছোগরা অর্থাৎ আওলিয়ায়ে কিরাম উনাদের বেলায়েত উনার মাকাম সমুহ হাসিল করা যেতো। তিনি বেলায়েতে কোবরা অর্থাৎ হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উনাদের বেলায়েত পর্যন্ত সস্প্রসারিত করেন। অর্থাৎ একজন সালিক এই নকশবন্দিয়া-মুজাদ্দিদিয়া ”ত্বরিকা” চর্চার মাধ্যমে নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম হবে না, তবে উনাদের বেলায়েত সে হাসিল করতে পারবে।
এই সকল কারনে পরবর্তিতে কাদেরিয়া, চিশতিয়া, নকশবন্দিয়া ও মুজাদ্দেদিয়া এই চার ”তরিকার” ব্যাপক প্রচলন হয়। কেননা এই চার ”ত্বরীকার” মাধ্যমে সহজে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনাদের মা’রিফত-মুহব্বত হাসিল করা যায়।
সাইয়্যিদ আহমদ বেরলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ”ত্বরীকা”কে ”মুহম্মদীয়া ত্বরীকা” বলা হয়। এটি মূলত নকশবন্দীয়া-মুজাদ্দিদিয়া ”ত্বরিকার” একটি সংস্করণ।
আহলে বাইতে রসুলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম-মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ, সুলত্বানুন নাছির আলাইহিস সালাম তিনি ””মহাসম্মানিত উম্মিয়া ত্বরিকা”” প্রচলন করেন। এটি নকশবন্দিয়া-মুজাদ্দেদিয়-মুহম্মদিয়া ”ত্বরীকা” উনারই সংস্করণ।
””মহাসম্মানিত উম্মিয়া ত্বরীকাতে”” মা’রিফত-মুহব্বত, নিসবত-কুরবত উনার বিষয় কে এতো সম্প্রসারিত করা হয়েছে যা পুর্বে কোনো ”ত্বরিকাতে” করা হয়নি। এই কারনে বর্তমানে সকল ”ত্বরিকার” মূল হচ্ছেন,
””মহাসম্মানিত উম্মিয়া ত্বরিকা””
উম্মি মানে হলো মূল। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেমন আন নাবী আল উম্মি অর্থাৎ সকল নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মূল। তেমনি ””মহাসম্মানিত উম্মিয়া ত্বরিকা”” হচ্ছে সকল ”ত্বরিকার” মধ্যে মূল।
একজন সালিক ””মহাসম্মানিত উম্মিয়া ত্বরিকা”” উনার মাধম্যে অতি সহজে অত্যাধিক মা’রিফত-মুহব্বত, নিসবত-কুবরত হাসিল করতে পারবে। সুবহানাল্লাহ!
…
…
…
…
…